Tuesday 10 October 2017

ভেজা মনের ঠিকানা

                        ভেজা মনের ঠিকানা

                            কবি :- সপ্তর্ষি মণ্ডল 

        (কবিতাগুলি নিজের ভালবাসার প্রতি উৎস্বর্গ করলাম)

        সুচিপত্র 

১.প্রাক্তন

২.তবু মনে পরে....
৩.শেষ ভালোবাসা 
৪.একটা স্বপ্ন 
৫.প্রথম দেখা 
৬.এক খসে পরা তারা 
৭. তোমার কথা  
৮.গোলাপি প্রেম 
৯.নিসান 
১০.কথা দাও
১১.LOVE AT FIRST SIGHT 
১২.নতুন 
১৩.আমাকে চিনতে পারছ ?
১৪.চল না...
১৫. অপেক্ষায় তুমি 
১৬.আমার ঠিক যেমনটি চাই
১৭.নতুন ভোর 
১৮.ভাবছি আবার একবার
১৯.বোঝে না ...
২০.যদি ফিরে আসি...
২১.একটা উত্তরের অপেক্ষায় 
২২.অপেক্ষার দিন রাত্রি 

----------------------------------------------------------

কবিতা 



১.প্রাক্তন

আকাশ ভর্তি তারা আর দুপাশে লাল গোলাপ ফুল
হালকা হাওয়ায় উড়ে যায় রেশমি চুল ।।
কি সুন্দর না ! কি মনোরম দৃশ্য এখানে 
কি অদ্ভুত মিষ্টতা দু চোখ যায় যেখানে ।।
মন ভরে গেল তোমায় দেখে আজ এতদিন পরে 
হাসি মুখে মাথা নেড়ে চলে এলাম রেলকামরার ঘরে ।।
তুমি বোধহয় চিনতেই পারনি আমায় ,
আর শত ব্যস্ততায় আজ আমারও একটুও নেই সময় ।।
রাত গভির হল , ঘুম নেমে এল কামরা জুড়ে
আমি কিন্তু ঠাঁয় দাঁড়িয়ে সিগারেট হাতে অনেক দূরে।।
স্টেশন , ব্রিজ , সব নিমেষেই হারিয়ে গেল
কিছু পেরিয়ে গেছে আর কিছু মিনিটখানেক দাঁড়াল ।।
ওপাশের দরজা তখনও খোলা 
আলো আঁধারি খেলায় তোমার স্মৃতির মেলা ,
জানি তুমি পর আজ আমার কাছে 
তবু কিছু কথা ভাগ করে নিতে কি কোন মানা আছে ?
এই তো সেদিন এমনই একটা রাত 
কামরার ভিতরে আমি , নিচে তুমি আর মাঝে দুটো হাত
চেপে ধরে চলেছিল সাথে সাথে বেশ কিছুটা পথ
তারপর উঠে এলে তুমিও ভিতরে , ছেড়ে গেল সাথ ।।
আর এ পথে ঘন্টা চারেক বাকি 
সেটুকু কি বোঝ তুমি না কি ,
অনেক কথা তোমায় বলতে বাকি রঞ্জিনি 
যেকথা তোমায় আজও বলা হয় নি ।।
অভিমানে চলে গেলে সেদিন অনেক দূরে 
আমিও সেদিন ঠিক করেছিলাম দেখব না ফিরে ,
তারপর সংসার বাঁধলাম ; সাথে কলম ও সাদা খাতা 
বিয়ে করলাম না বুঝেই , নাম কবিতা ।।
সঙ্গে সঙ্গেই থাকি দুজন মিলে 
মন হলেই বেরিয়ে পড়ি - পাহাড় , নদী বা ঝিলে ।।
জানো , খুব অভিমানী , কিছুতেই ধরা দেয় না সহজে 
কি জানি কি মনে করে ; নিজেকে নিজে ।।
এই দেখ , সকাল হয়ে এল ,
জনহীন রেল স্টেশনে ; ট্রেন থামল ।।
কবিতার হাতে হাত ধরে নেমে পড়লাম 
ভাগ্যে মেলে একটা রাত যখন তোমায় কাছে পেলাম ।।
ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে , চতুর্দিক নীরব 
ধীরে ধীরে ধোয়াঁয় মুছে যাবে ফেলে আসা সব ।।
তুমি তো অনেক দূরে যাবে ; তাড়া হুড়ো নেই 
হয়ত আবার কোনদিন দেখা হয়ে যাবে এই পথেই ।।
সোহাগ , শাঁখা , সিঁদুর এসব আজ শুধুই তোমার 
আর তুমি চিরকালের তার ,
আর আমার জীবন শুধুই তোমার কবিতার 
আর কবিতার মধ্য দিয়ে আজও তুমি আমার ।।



২.তবু মনে পরে....
(Someday pains need to be accepted)

স্টেসনের ভির ঠেলে উঠে আসি ,
আজ রাতে চালান করা হবে ।।
একটা দমকা হাওয়া ,
ছুটে বেড়াছে রাতের শেষ কামরায় ।।
আজ অনেকদিন পর তার মুখখানা দেখলাম ।।
হ্যা, ঠিক চিনেছি ।।
সেই ছোটখাটো , গোলগাল মুখ ।।
মনের কোটরে ঢেকে যাওয়া 
ধুলো সরিয়ে মিলিয়ে দেখেছি বারবার ,
বারবার চেয়েছি আর খুজেছি অনেকবার ।।
কিছুটা মুছে গেছে, কিছুটা গেছে ছিড়ে ,
তবু মনে পড়ে ;সেই কবেকার পরিচয় ।।
না ।। আর ডাকিনি আজ,
দেখিনি আবার পিছন ফিরে ।।
কষ্ট হলেও বুঝে গেছি,
সে আজ কেউ নয় আমার ।।
আজ হতে তার পরিচয়, লেখা আছে 
তার মাথার লাল সিঁদুরে ।।



৩.শেষ ভালোবাসা 

হৃদয়ে আমার কত কথাই তো রয়েছে ঠাসা ,
লোকে জানে না এখনো , হয়তো বুঝতেই চায় না 
কেউ কখনও , আমাদের শেষ ভালোবাসা ।।
গরমের হাওয়ায় রঙে রঙ্গিন তুমি জীবনে ,
তোমার হালকা ছোঁয়ায় গ্রীষ্মের দাবদাহও মনে হয়
তৃপ্ত এই ভুবনে ।।
টানা টানা হরিণী চোখ , লাল ঠোঁট , 
গায়ে জড়ানো মায়ের একটি শাড়ি ,
বাঙরেজি কথা তবু , 
বাঙালি গিন্নি দেখতে লাগে ভারি ।।
হৃদয়ে আমার কত কথাই তো রয়েছে ঠাসা,
লোকে জানে না এখনো , হয়তো বুঝতেই চায় না 
কেউ কখনও , আমাদের শেষ ভালোবাসা ।।

সামনে বসন্ত উৎসব , 
প্রকৃতির মনে বদনে যৌবনের প্রকাশ ,
প্রেম থেকে প্রতিবাদ , গরম রক্তের তেজ 
সূর্যের প্রখর দাবদাহ আর কিশলয় ,
ভালোবাসার এই চৌকাঠে , প্রেমিকের মন 
আর কি সয় !!
তোমার ওই তেজে চলোনা ,
একবার পুড়িয়ে দাও এ মনের পুরোনো বেদনা 
মাথার সিঁদুরে রাঙিয়ে নিতে না পারো যদি ,
না হয় ভালোবাসার সাত রঙে রাঙ্গিয়ে ,
তোমার মনের গভীরে রেখে দিও 
আমার হৃদয়ের চাবিখানি , সাত জন্ম ধরে ।।
হৃদয়ে আমার কত কথাই তো রয়েছে ঠাসা ,
লোকে জানে না এখনো , হয়তো বুঝতেই চায় না 
কেউ কখনও , আমাদের শেষ ভালোবাসা ।।

বাড়ির কথা ভেবোনা ,
সবাই দেখো খুব মেনে নেবে আমাদের 
আদর , যত্ন আর ফুলের মালা গলায় 
কালকের রাজনন্দিনী , আজকের রাজলক্ষি হয়ে 
বিরাজ করবে সবার হৃদয়ে ।।
বন্ধু , বান্ধব সবাই দেখো খুব খুশি হবে ,
কে জানে তুমি এসব বুঝবে আর কবে !
কে জানে স্বপ্ন কবে স্বার্থক হবে !

হৃদয়ে আমার কত কথাই তো রয়েছে ঠাসা ,
লোকে জানে না এখনো , হয়তো বুঝতেই চায় না 
কেউ কখনও , আমাদের শেষ ভালোবাসা ।।



৪.একটা স্বপ্ন 

এমন এক দিন আসবে ; যেদিন 
কেউ আমায় মিস করবে ,
কেউ আমার পথ চেয়ে থাকবে ; প্রতিদিন 
আমার মধ্যেও কেউ নিজেকে খুঁজে পাবে l 

এক স্বর্গ হয়ে উঠবে এ মাটি 
ভালবাসার বর্ষা ঝরে পড়বে ; চোখের জলে 
হাতে হাত ধরা ; যেন দুটি লাঠি ,
নিজেদের ধর্ম নিজেরা লিখছে,নিজেদের বলে l 

চোখে চোখেই ভেসে উঠবে ,  
সূর্য , চন্দ্র , তারা l 
নিজেদের ইচ্ছায় স্বপ্ন খুঁজে নেবে ,
একে অপরের জন্যেই হবে সকল জীবন সারা l 

কল্পনা,কাব্যিক, স্বপ্নের এক রূপকথার ছড়া ;
কঠিন বাস্তবেও স্বপ্নের সে স্বপ্ন আমায় দিচ্ছে ধরা l



৫.প্রথম দেখা 

বৃষ্টি ধারা ঝরে পরে ঐ ওপার থেকে 
এই বাদল মাখা দুপুরে তোমায় দেখেছি ;
এক শান্ত রূপ ; যেন কারুর প্রতীক্ষায় মগ্ন l 
যৌবনের রূপ ঠিকরে বেরোচ্ছে শাড়ির ফাঁকে l 
এক বার ডাক দিলাম ;
তোমার চোখ তখন ঐ দূরে খুঁজে চলেছে 
অবিরাম , অনবরত l 
বৃষ্টি তখন বেশ জোরে ঝরছে ;
একটা পাতলা ছাতায় আর ধরছে না ,
তাই,কিছুটা কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম ;
উষ্ণতার সে কি বিচিত্র পরশ ,
একটা ছোট্ট ছোঁয়া ; আর আমাকে কাঁপিয়ে গেলো এক মুহূর্ত l 
আলতো ছোঁয়ায় সেও একটু নড়ে উঠলো l 
একটু রাগী মুখে আমার দিকে ফিরে তাকালো,
এগিয়ে এসে বললো ,
'আমি তো তোমারি অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ;
যুগ যুগ ধরে ' l 
একটু অবাক হলাম ; কিন্তু একটু রাগও হলো 
ভাগ্যেরই ওপর l 
এভাবে কাউকে অপেক্ষা করায় ,
বিশেষ করে এমন সুন্দরী মায়াবিনী যখন l 
সেই প্রথম পরিচয় আর দেখো ; 
কখন যে বারোটা বর্ষা পার হয়ে গেছে  
ছাতাগুলোও তার হিসাব রাখে নি l 



৬.এক খসে পরা তারা 

স্বপ্ন দেখি একদিন ফিরে যাব , 
তোমাদের সভায় , তোমরা হয়ে l 
আর কিছু না পাই ; করতালিটা কুড়িয়ে নেব l 
দাড়িপাল্লায় মেপে দিতে হবে না ,
ভিখারী মনে করে যা পারবে দিও ,
আমি তাতেই খুসি l 
নিজের সক্ষমতার মধ্যে দিয়ে ,
তোমাদের রাঙিয়ে দিয়ে যাব হৃদয় l 
পারলে শরতের স্নিগ্ধ রঙের আলপনাটা 
একে দিয়ে চলে যাব ,
দূর থেকে দুরন্তে l 
সূর্যের তেজও সেদিন 
পারবে না আমায় থামাতে l 
পারলে , বর্ষা কে বলে দিও,
যেন সামলে ঝরে ; আমায় যে আর পাবে না 
এ রঙ্গমঞ্চ , কোনদিন ; কোনভাবে l 
চাতক হয়ে যখন চুরি করতে আসব আবার ,
বৃষ্টির শীতলতা ঠোটে লাগিয়ে ,
ওই নীল্ ঠিকানায় l 
সেদিন পারলে খুঁজে নিও আমায় ,
তোমাদের মাঝে , তোমাদের হয়ে l



৭. তোমার কথা  

কাজল চেরা চোখে ; স্বপ্ন বোনে এ মন ,
লাল দিগন্ত ওপারে ওই ; এপারে দাঁড়িয়ে তুমি 
আর মধ্যিখানে আমি l 
শত শত জীবন্ত চাওয়া পাওয়ার ইতিহাস 
লিখে গেছে এ বুকে ; 
তবু মনে পরে বড়;তার প্রথম প্রেম নিবেদন 
শান্ত ঘোমটা মোরা সে মুখে l 
পূর্ণিমার চাঁদ আজ লাজুক ভাবে দেখে ,
সারা দেহ তার জ্বলেছে সারারাত ,
কালী তারই স্পষ্ট তার মুখে l 
বসন্তের কোকিল হয়ে এসেছিলে সেদিন ;
আম পাতার ফাঁকে তার কুহু কুহু রব ,
কবে যে আমার আবদার ; অভিমান ,
রাগ ; ক্ষোভ ; দুঃখ হয়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছে 
জীবনের প্রতি স্পন্দনে ; টের পেলাম কই?

রিফিউজি হয়ে এসেছিলে সেদিন জীবনে ;
আজ সব-তোমার,শুধু তুমি আমার l 



৮.গোলাপি প্রেম 

সুন্দরী গোলাপ ,
লাল ঠোট , গায়ে সবুজের প্রলেপ 
ভালোবেসে টেনে নিলাম কাছে 
জীবনে এ উত্তাপের প্রয়োজন আছে 
বুঝেছি প্রথমবার 
প্রিয়তমা গোলাপ কেন আজও সবার ।।
হাঁসি মুখে হালকা আলিঙ্গন 
জীবনের প্রথম চুম্বন , 
ঠোটে ডুবে থাকা ঠোঁট , বুকে মিশে যাওয়া ঘন চুল 
মনে হল বুঝি জীবনের বড্ড ভুল 
যখন কাঁটার আঁচড়ে জীবন জেরবার 
তবু উপায় নেই ফিরে যাওয়ার ।।
প্রেম বুঝি এরই নাম 
ঠোটে বুকে রক্তমাখা তবু অমূল্য অঙ্ক এর দাম ।।




৯.নিসান 

একলা রাতে জ্যোত্স্না তলায় 
দাড়িয়ে ছিলেম দুজনে l 
তোমার লাল শাড়ি আমার সাদা কুর্তায়
হেলান দিয়ে ঝুলিয়েছিল নিজ প্রেম ;
তখন মেঘলা রাত ; বর্ষা কাল l 
আমাদের মিলনের প্রথম তিথি ; 
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোর l 

তুমি দক্ষিন আর আমি উত্তর 
চোখে চোখ রেখে বেঁধেছিলাম 
ভালবাসার ডোর l 
ওপরে আকাস গর্জাচ্ছে , 
ঠিক আজকের মতই l আর ,
শীতল বারিধারা ঝরে চলেছে অবিরাম -
টানা দু ঘন্টা l 
আমার বুকের ওপর এলিয়ে গেছে মাথা ;
আমার বাহুডোরে বন্দী তোমার সরলতা l 

সে ভিত সন্ত্রস্ত চেহারা ; মনে পড়ে আজও ;
আমাকে একবারই মুখ তুলে বলেছিল ;
দুর্যোগে আমায় ছেড়ে যাবে না তো?
আমার মুখে তখন ছোট্ট হাঁসি আর 
তোমার মাথায় এক নিরব চুম্বন l 

বৃষ্টি ছেড়েছে কখন জানি না ;
অনেক রাতে, আনমনা দুটি মন ,
ঠিক ফিরে আসে আপন ঠিকানায় l 
শুধু জামা ভর্তি লাল নিসান ; 
এক অন্য কাহিনী বলে যায় , চিরকাল l



১০.কথা দাও

কথা দাও , কবিতা হয়ে থাকবে  
আমার পাশে l 
পচা রদ্দি কিছু পাতার মধ্যে
মুখ লোকাবে না কোনদিন l 
পৃথিবীতে নিপীড়িত , বঞ্চিত , উপেক্ষিত
জনসাধারণ, যুগে যুগে 
ভির জমিয়েছে এ রাস্তার ধারে l 
বলতে চেয়েছে, তাদের চাওয়া পাওয়ার 
অধিকার টুকু l 
বাক রোধ হয়ে বন্দী হয়ে থেকে গেল 
ওই লাল হলুদ বাধনে ,
একটি কালির খোচায়ে l 
তুমি কথা দাও ,
এ প্রতিবাদের সুর তোমার কন্ঠে 
জ্বলে উঠবে l এটুকু  কথা দাও l 
শুধু , সেই অভাগাদের পাশে থেকে যাবে ;
চিরকাল , একটি ভাষা হয়ে l 
যেমন থেকেছ আমার কাছে 
কবিতা হয়ে l



১১.LOVE AT FIRST SIGHT 

আমায় ডেকো না আর ;
যেতে দাও , আমায় চলে যেতে দাও l 
ডাক এসেছে তার ; ব্যস্ততা অপার ,
কালো মেঘের ফাকে বয়ে যাচ্ছে বেলা ,
সময়ের সাথে অপেক্ষার এক লুকোচুরি খেলা l 
প্রথম মিলনে তোমায় বানিয়েছি নিজের 
দুরত্ব আর যে সহে না --
আমাদের কাহিনী হোক এক চর্চিত সুর ,
মুখে মুখে ভেসে গেছে বহুদূর ;
এ বাঘ বন্দী খেলা l 
তুমি , এক অপরুপা ; মন প্রিয়া 
তোমার বন্ধনে মুক্ত এ হৃদয় 
স্বপ্ন দেখি তোমার সাথে কাটিয়ে দেওয়া জীবনের 
আর শুধুই থাকুক বেঁচে সে সুর,আমাদের প্রেমের l 
তুমি সকাল , আমি তবে সাঝ 
আমি যদি রাজা হয় ; তুমি আমার প্রানের তাজ l 
হাসি খুসি আর দুঃখ , জীবনে তিনের ঋণ , 
তোমার আমার মিলনে , জাগবে সুদিন l 
আজ থেকে ,
তোমার সিথির মাঝে আমার লাল সিঁদুর খেলা ,
পূর্ণতায় ভরে গেছে , এ জন্ম মৃত্যু বেলা l 



১২.নতুন 

চোখের জলে ভিজে ওঠা স্বপ্ন রাশি 
আবার দাঁড়িয়ে চোখের ওপারে l 
আজকের প্রভাত আবার বসিয়ে গেলো 
তাকে এ হৃদয়ের অন্তরে l 
জীবন এক নদীর জল , কেবল বয়ে চলে 
পুরানো  চিঠিখানি ; ভাসিয়ে দিলাম 
তারই স্রোতের তলে l 
আসা যাওয়ার খেলা যে আজ ;
মানে না কোনো বাঁধা l 
তবু, হেটে গেছি যত তার কাছে , 
ফেঁসে গেছি ততই এ গোলক ধাঁধার অন্তরে l 
আপন ভাবের স্বাদ চেখে দেখি বারবার ;
আহত হয়েছি ; যন্ত্রনায় কেঁদেছি সারা রাত ,
তবু কেন জানি না , আঘাতের সে নেশায় 
প্রেমিকের মন ছুটে যায় আবার l 
যারে দেখি নি চোখ ; লাগে নি ঠোটে 
যার নরম ছোয়া  , তবু তার লাগি 
এ বোকা মন চেয়েছে প্রতিবার 
হাজার দুয়া l 
ভালো থাকুক সে , সুখে থাকুক ;
আর অন্য দিকে , আমার অপেক্ষা চলে যায় 
নতুন স্বপ্ন বুননের কাজে l 
হয়তো একদিন আবার ছিড়ে যাবে সব ,
ভেজা রাতের চোখ দুটি হবে লাল l 
সখি ; কথা দাও ,
প্রতিবারের মতো তুমিও বদলে যাবে না l 



১৩.আমাকে চিনতে পারছ ?

আমাকে চিনতে পারছ ?
সেই সেবার ভোটের লাইনে দাড়িয়ে থাকা ,
ঘামে ভেজা মুখ,আগামীর এক উজ্বল স্বপ্ন ভেসে আসে - আমি তখন দাগের ওপারে; ভূমিকায় পরীক্ষক l 
মনে পরে সেই শীতের দুপুর আর  
ব্যস্ত সেই বাস স্ট্যান্ড ;
আমি ১২ সি , তুমি ১২ ডি - পরস্পর বিরোধী 
মোদের সে যাত্রাপথ l 
তোমার ওড়নার হালকা ছোয়া - 
আজও গন্ধ লেগে আমার হৃদয় l 
২১সের সেই চোখ দুটি 
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ;
না , খারাপ কিছু নয় ; জাস্ট কিউরিওসিটি l 
কে তুমি,মায়াবিনী ?
সেই বৃষ্টিধোয়া বিকেল আর সল্টলেকের সেই
পাঁচতারা সপিং মল ,
লাল শাড়ির ঘোমটার আড়াল থেকে 
উঁকি দেওয়া দুটি চোখ ;
কালো মেঘের রঙে দেখেছিলাম 
সেই কালো হরিন চোখ : 
গভীর এক স্বপ্নে বিভোর l 
তবে ,
তুমি তো কোনো স্বপ্ন নও ; 
বাস্তবের আঙ্গিনায়,
তুমি এক ভাষা সকল তরুণ প্রানের l 
আমায় কি এখনো চিনতে পারো নি ,
মোর প্রিয়তমা !



১৪.চল না...

চল না পালিয়ে বেড়াই;দূরে ঐ বৃষ্টির রেখা ধরে l 
হতে পারে কোনো জঙ্গল বা পাহাড়ের ছাওয়া ;
কিংবা কোনো  বাদলা দিনের মেঘলা হাওয়া l 
চল না ওদের পিঠে অনেক দূরে উড়ে চলে যাই -
মেঘেদের দেশে l 
তোর জন্য আমি আর আমার জন্য তুই ;
বাকি সব গৌণ্য l 
আমাদের রাজসভায় তুমি শুরু ; আমি শেষ ; আর , ভালোবাসাটাই মুখ্য কম্ম l 
তোমার হাতে হাত ধরে ; চোখে চোখ রেখে 
কেটে যাক বেলা l 
পূর্ণবয়স্ক দুইজন আমরা , চলো না ;
সময়ের কাটায় গা এলিয়ে দিয়ে ,
পার করে দি , আমাদের রোমাঞ্চকর যৌবন l 

রাবনের দেশে সীতা আবার হবে না অপমান ;
তোমার ললাটের লাল টিকাখানি ,
হয়ে উঠবে , আমার ভালোবাসার সম্মান l 



১৫. অপেক্ষায় তুমি 

যখন তোমায় মনে পরে ;
বন্ধ চোখে ক্লান্ত এক স্বপ্ন যখন 
পার হয়ে যায় সব কিছু ;
তখন দু ফোঁটা জলে ভেজা নয়ন 
আবার ভিজে ওঠে ওই চোখেরই জলে l 
কোন সে দূরে লুকিয়ে থাকো 
মনে মনে ছবি আঁকো ,
ভবিষ্যৎ আজ আবার হেসে ওঠে 
যেন কে মন দিয়ে এঁকে গেছে ,
বেরঙা এক রামধনু ,আমারি গগনে l 
লাল , নীল , সবুজ কালো 
দেখতে বড়োই লাগে ভালো ;
মেঘমল্লার রাগ ধরেছি গুনগুনিয়ে ;
যখন আকাশ বেয়ে বৃষ্টি নামলো,অঝোর ধারে 
গুটি গুটি পায়ে রামধনু আবার ফিরে যায় ;
বন্ধ চোখের ওপারে ,
অপেক্ষায়, তুমি আসবে আবার l 
এতো তো ডেকেছি  চুপিসারে 
তবু কি কিছুই বোঝো না !!



১৬.আমার ঠিক যেমনটি চাই

আমার ঠিক যেমনটি চাই ,
তুমি যেন ঠিক তাই ।।
সেই চোখের টান , একনজরে 
আকুলি বিকুলি প্রাণ ।
সেই ছোঁয়া , সেই গন্ধ 
সেই একইরকম পুরোনো ,
এ সব কি তুমি বোঝো না জানো !!
সেই হীরা তুমি , 
আমার কাছে কোহিনুরের থেকেও 
অনেক বেশি দামি ।।
আমি তো এক ছোট্ট শিশু ,
তোমার কোলে মাথা রেখে তৃপ্ত ।
আর তোমার সে মা মা ভাব ,
যা কিনা আমার সেই ছোট্ট বেলার স্বভাব ।।
সেই রঙিন আঁচল , লুকিয়ে রাখা মুখ 
সারাটা দিন জড়িয়ে থাকা ঐ শীতল বুক ,
হাতটা ধরে গুটি গুটি পায়ে 
আমার সাথে এগিয়ে চলা ।।
রাগি , গম্ভীর মেজাজ আর বড় বড় 
লাল চোখের মধ্যে দিয়ে বলে যাওয়া 
সে অনেক কথা , 
আমাকে ছাড়া যা আর কাউকে যায় না বলা ।।
এই টুকুই তো জীবনে চেয়েছি ,
তোমারই মধ্যে যেন সে সবটুকু আবার 
আমি পেয়েছি , খুঁজে পেয়েছি ।।
আমার ঠিক যেমনটি চাই ,
তুমি যেন ঠিক তাই ।।
তবু জানি , ফিরে তো দেখো না একবার 
কত ডাকি বারবার ,
তোমার বুঝি আমাকে নেই দরকার 
আর আমার ভয় শুধুই তোমাকে হারাবার ।।
নেই কোন অধিকার , তোমাকে আটকাবার 
সম্পূর্ণ স্বাধীন পাখি তুমি , 
যেখানে খুশি ; সেখানে যাওয়ার ।।
তবু কেন যে এ মনে বারবার 
জাগে সেই একই আশা , 
এরই নাম বোধহয় , ভালোবাসা ।।
আসলে , আমার ঠিক যেমনটি চাই ,
তুমি যেন ঠিক তাই , ঠিক তাই ।।



১৭.নতুন ভোর 

সকালের সূর্যটা কেমন নতুন মনে হল ,
যেন পূর্ণ প্রাণ ভরে দিয়ে কেউ ছেড়ে দিয়েছে ।।
আকাশ লাল করে বয়ে চলেছে 
তার তরুণ রক্ত ।।
বাতাসে এক খুশির আনন্দ ,
এক অদ্ভুত নেশায় যেন আসক্ত পৃথিবী ,
বাঁচবার নেশা , বাঁচাবার নেশা ,
নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলার নেশা ।।
পুরোনো জীর্ণ পাতা উড়ে গেছে 
দখিনা বাতাস বইছে প্রকৃতির প্রতি অক্ষরে ,
সে মহা আনন্দের উৎসবে আমায় যেন 
কে টেনে নিয়ে চলেছে , উল্লাসের এই জোয়ারে ।।
পরিচয় হীন , নাম গোত্র জানি না কিছুই ,
তবু তার ধ্বনি আমি শুনতে পাই ,
ঐ পুব আকাশের ওপারে যে পথ রয়েছে ,
ওখানেই , হ্যা গো ওখানেই 
আমি রোজ তাকে দেখতে পাই ।।
সে অচেনা , অজানা মুখ আমায় ডাকে রোজ 
কত কথা কয় ,
তবে একবার তার মনের পুরো ঠিকানাটা 
মন আমার লিখে রাখতে চায় ।।
জানা নেই , কেন এতো দিন পরে 
নতুন মনে হলো সব কিছু  ,
একি কোন মায়া , নাকি তার ছায়া 
যা নতুন করে গড়ছে আমায় ।।



১৮.ভাবছি আবার একবার

ভাবছি আবার একবার ভালোবাসি ,
সত্যি না হয় ; মিথ্যে মিথ্যেই ।।
রোজ দেখা করার আশা নিয়ে 
বসে থাকবো দুজনে , অনেক দূরে ।।
মনের কথা দেওয়া নেওয়া চলবে 
পাখিদের গানের সুরে সুরে ।।
বিকেলের পরন্ত লাল রোদের আলো 
তোমার ছবিখানি আরও একবার 
কে যেন , মনের পর্দায় এঁকে দিয়ে গেল ।।

ভাবছি আবার একবার ভালোবাসি ।।

আজ তোমার জন্মদিন , 
কেক কাটছি একা একাই ।।
তুমি নিশ্চই খুব ব্যস্ত ,
বন্ধুদের তো ছাড়ার সময়ই নাই ।।
আমাকে মনে না পরে যদি 
ক্ষতি নেই কোন ,
অভাগাদের কোনো দাম হয় না 
এটুকু যেন ।।
ড্যান্স ফ্লোর টায় ফাঁকা রাত 
ঘুমের মনে হয় পায়ে বাত , 
আসতেই চায় না আজকাল ।।
তোমার বাড়িতে আনন্দের রোশনাই ,
উপহারে ঠাসা , রঙিন জলের ফোয়ারা 
আর তাসা ।।
আমাকে মনে না পরে যদি 
ক্ষতি নেই কোন ,
অভাগাদের কোনো দাম হয় না 
এটুকু যেন ।।
কাল সকালে মনেতে এসো
ভাবনাতেই আমায় আবার ভালোবেসো ।।

সত্যি না হয় ; মিথ্যে মিথ্যেই ।।



১৯.বোঝে না ...

তুই জানিস না , তোকে কত ভালোবাসি 
রোজ সকালে তোর জন্যই বারবার ফিরে আসি 
হারিয়ে যাওয়া তারাদের দেশে ।
আমি অনাথ এক , একবার চেয়ে দেখ 
পুরো বদলে গেছে সব । 
আকাশ পুরো গোলাপের মতো লাল ,
ভালোবাসার ফরমান প্রকৃতিরও ইশারায় ।
আমার এ মনে তুই , এ নিথর শরীর তোর 
যতই দূরে ফেলে দিস , তুই ভালো করেই জানিস 
এর অধিকার আমার থেকেও অনেক বেশি তোর ,
স্বাক্ষ্য একসাথে কাটানো বা না কাটানো 
প্রতি প্রহর ।।
জানিস তোর ঐ সরলতা খুবই ভাবায় 
এ যুগেও এমন মেয়ে পাওয়া যায় !
ভাবতে অবাক লাগে ,
তোকে দেখলেই মায়ের ছবিটা 
চোখের সামনে জাগে , একদম অবিকল সমান ।
তোর মিষ্টি স্বর , একদিন ভরিয়ে দেবে ঘর 
এ আশাতেই বুক বাঁধি ।
তোর ঐ বুকের প্রেম , ঐ স্নেহ আর মমতা 
আশ্রয় দিয়েছিলো আমায় ,
তারই নিরাপদ আশ্রয়ে মুখ গুঁজে 
আজও দুঃখগুলো খুঁজে নেয় ,আনন্দের পরম আশ্রয় ।
তুই বুঝিস না , তাই তো চুপ করে যাস ,
কথা বলেও বলিস না অনেক কিছু 
যা তোর ঐ বাঁকা চোখের ফাঁক দিয়ে বলে যায় 
তোর হৃদয় ।
সত্যি কি মিথ্যা জানি না , 
শুধু বুঝি তুই এক বিশাল যন্ত্রনা 
আবার ঐ যন্ত্রনার মাঝে এক পরম স্বান্তনা ।
সাধে কি এত ভালোবাসি রে তোকে , পাগলী 
বোঝে না , তোর অবুঝ মন , সেটুকুও বোঝে না ।।



২০.যদি ফিরে আসি...

যদি ফিরে আসি কোনোদিন ,
এই পথ ধরে আবার 
ফিরতে দিও গো তোমার ছায়ায় 
বসতে দিও তোমার শীতল হাওয়ায় ।।
সুযোগ যদি হয় , একবার দেখতে দিও ,
কেমন আছো তুমি সেদিন আমায় ছাড়া ।।
সেই কাদা মাখা পায়ে 
আবার ফিরবো মোরা ঐ জামরুল দীঘির পারে 
লুকিয়ে থাকবো ঐ গাছের মগ ডালে 
দেখবো , শিশির ফোঁটা কেমন করে 
দূর্বা তলায় ঝরে ।।
তুমি তখন ওদের বাড়ির বউ ,
মাথায় লাল টিকা , পরনে লাল শাড়ি ,
আমার তখন বিশাল ব্যাপার , কত নাম 
প্রচুর বদনাম আর বড় বড় 
ঘর ,বাড়ি আর গাড়ি ।।
তবু মনে মনে সেই ছেলেমানুষ আজও আমি 
ঠিক যেন বাঁধন ছাড়া , দিশা হারা ।।
সুযোগ যদি হয় , একবার দেখতে দিও ,
কেমন আছো তুমি সেদিন আমায় ছাড়া ।।




২১.একটা উত্তরের অপেক্ষায় 

যত মিশে যাই , পাগলি তোকে আজ 
ততই কাছের ভেবে জড়িয়ে ধরি ।।
তুই বুঝিস কিনা জানি না ,
তবে তোকে ছাড়া এ মন একটুও মানে না ,
রাতের ঝিঁ ঝিঁ ডাকে বাগান জুড়ে 
মনে হয় তুই যেন নাম নিচ্ছিস আমার বসে ওই দূরে ।।
একটা কাঁচের দেওয়াল মধ্যিখানে আমাদের 
এপাশে আমি ওপাশে তুই , মধ্যিখানে ভাগ্যের ফের ।।
অন্ধ মনে হয় নিজেকেই 
ভালবেসে চলেছি আনন্দি রে তোকে না দেখেই ।।
এখন শুধু এই রাত কাটতে বাকি আছে 
কাল সকালের আলো কি খবর জানিনা আনবে কাছে ,
নিজের বলে ও লাল ঠোট মিশে যাবে এই গালে 
নাকি মন ভাঙবে আবার আগামীর সকালে ??



২২.অপেক্ষার দিন রাত্রি 
[অনেকে বলেন মন থেকে ভালোবাসলে নাকি সব পাওয়া যায় ।। তাই এই লেখা , যদি মন পাওয়া যায় , যদি বোঝানো যায় একটুও ......]

একবার কাছে এস প্রিয়া ,
তোমায় দুচোখ ভরে দেখব 
মাথা ভরা চুলের ছাওয়ায় বসবো ,
লাল ও দুটি ঠোঁটে বোঝাব নিজের তৃষ্ণা ।।

অনেকদিন কথা হয় নি ,
ওই কোমল সততা একবার শুনতে চাই 
জীবনের সত্যতার জ্ঞানে নিজেকে একবার 
নতুন করে ভাসাতে চাই ।।

তোমার পূর্ণ যৌবন টানে আমায় ,
ও রসের ফোঁটায় ফোঁটায় ভিজিয়ে দেব 
ঠোঁটের দুটি কুল ।।
শান্ত মনে , একান্ত গোপনে তোমার বুকে 
মাথা গুঁজে ফিরে যাব আবার একবার 
নিষ্পাপ শৈশবে ।।
মনের যে পবিত্র মিলন ঘটেছিল সেদিন 
আজ সারা শরীর জুড়ে সেটুকু হবে বিলীন ।।

তোমার মনের মনিকোটরে হবে আমার বাস 
আর সারা শরীর সে রাতে যখন মিলে মিশে একাকার 
সে যন্ত্রনায় প্রিয়া , আমি দেখেছি তোমার বিশ্বাস 
আমার প্রতি,আমাদের প্রতি,আমাদের আগামীর প্রতি।।

ভালোবাসা মনে হল ঠিক এরকমই ---
এত বিষাক্ত যন্ত্রনা ; তবু অপরের মুখ চেয়ে 
সব কিছু ভুলে , আনন্দটুকুই সবথেকে বড় পাওনা ।।

একবার কাছে এস প্রিয়া .......